বদর যুদ্ধে কতজন সাহাবী শহীদ হন
বদর যুদ্ধে কতজন সাহাবী শহীদ হন সম্পর্কে বিস্তারিত বিষয়বস্তু নিয়েই থাকছে আমাদের আজকের মূল আলোচনা। সাথেই আপনাদের জন্য আরও থাকছে, বদর যুদ্ধ কত হিজরীতে সংঘটিত হয় সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য সমূহ।
বদর যুদ্ধ ছিল এক পবিত্র সংগ্রাম, যেখানে সাহাবীদের আত্মত্যাগ ইসলামি ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে আছে। তাই আমাদের আজকের পোস্টটি অবশ্যই সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন যেন বদর যুদ্ধে কতজন সাহাবী শহীদ হন সম্পর্কে বিশদ তথ্য পেতে পারেন।
.
বদর যুদ্ধে কতজন সাহাবী শহীদ হন
বদর যুদ্ধ ইসলামিক ইতিহাসের একটি গৌরবময় অধ্যায়। এই যুদ্ধে মুসলিমদের প্রথম বড় ধরনের সংগ্রাম ছিল, যেখানে তাঁদের সাহস, সততা এবং ঈমানের শক্তি চরম পরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছিল। ২ হিজরির ১৭ রমজান মুসলিমরা যখন মক্কার কাফিরদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে তৎকালীন বদর এলাকায় পৌঁছেছিল, তখন তা ছিল ইসলামের জন্য এক অতি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত।
বদর যুদ্ধে ৭০ জন কাফির নিহত এবং ৭০ জন বন্দী হয়। এটি মুসলিম বাহিনীর এক গুরুত্বপূর্ণ বিজয় ছিল। তবে, মুসলিম বাহিনীও এ যুদ্ধে অনেক মূল্যবান প্রাণ হারিয়েছিল। বদর যুদ্ধে কতজন সাহাবী শহীদ হন তা প্রশ্নে, ইতিহাস অনুযায়ী ১৪ জন মুসলিম সাহাবী শহীদ হন। তাদের মধ্যে ৬ জন ছিলেন মুহাজির এবং ৮ জন আনসারী।
মুহাজির সাহাবীরা ছিলেন সেই ব্যক্তিরা যারা মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করেছিলেন। তারা ইসলামের পথে প্রথম থেকেই সংগ্রামে নেমেছিলেন এবং ইসলামের প্রচারে তাদের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। আনসারীরা ছিলেন মদিনার লোক, যারা হিজরতকারী মুসলমানদের সাহায্য করেছিল এবং ইসলামের পথে তাদের প্রতি এক অনবদ্য সহায়তা প্রদান করেছিল।
এ সাহাবীদের শহীদ হওয়া ইসলামের ইতিহাসে এক মহান ত্যাগের নিদর্শন। তাদের আত্মবলিদান ও ঈমানের দৃঢ়তা আজও মুসলিম বিশ্বের জন্য অনুপ্রেরণা। এই শহীদরা নিজের জীবন উৎসর্গ করে ইসলামের বিজয়ের পথ প্রশস্ত করেছিলেন, এবং তাঁদের আত্মত্যাগ পৃথিবীজুড়ে মুসলমানদের জন্য চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
বদর যুদ্ধ কত হিজরীতে সংঘটিত হয়
বদর যুদ্ধ ইসলামের ইতিহাসে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এটি ছিল মুসলিমদের প্রথম বড় যুদ্ধ, যেখানে ইসলাম ও কাফিরদের মধ্যে শক্তিশালী সংঘর্ষ হয়েছিল। বদর যুদ্ধ মুসলিমদের জন্য শুধু একটি সামরিক বিজয় নয়, এটি ছিল ঈমান, ত্যাগ এবং একাত্মতার একটি মহা উদাহরণ। এই যুদ্ধ ২ হিজরির ১৭ রমজান তারিখে সংঘটিত হয়। মুসলিমরা তখন মদিনায় অবস্থান করছিল এবং মক্কার কাফিররা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে।
বদর যুদ্ধটি মদিনার দক্ষিণ-পশ্চিমে বদর নামে একটি ছোট শহরে অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে মক্কা থেকে প্রায় ৩ হাজার কাফিরের সেনাবাহিনী মুসলিম বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করতে আসে। মুসলিম বাহিনীর সংখ্যা ছিল মাত্র ৩১৩ জন, যা কাফিরদের বাহিনীর তুলনায় অনেক কম ছিল। তবে, তাদের ঈমান ও আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস ছিল অত্যন্ত দৃঢ়, যা যুদ্ধের ফলাফল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
এই যুদ্ধে বদর যুদ্ধে কতজন সাহাবী শহীদ হন সেই প্রশ্নের উত্তরে জানা যায়, ১৪ জন মুসলিম সাহাবী শহীদ হন। তাদের মধ্যে ৬ জন মুহাজির এবং ৮ জন আনসারী ছিলেন। শহীদদের আত্মত্যাগ ও সাহসী ভূমিকা আজও মুসলিমদের জন্য এক অনুপ্রেরণা। তাদের জীবন ইসলামের পথে এক মহান ত্যাগের নিদর্শন হিসেবে চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে। বদর যুদ্ধের ফলে মুসলিমরা একটি বড় বিজয় লাভ করে এবং ইসলামের প্রতি বিশ্বস্ততা ও ঈমানের শক্তি সম্পর্কে পৃথিবীকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা প্রদান করে।
বদর যুদ্ধের কারণ
বদর যুদ্ধ ইসলামের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধ, যা ২ হিজরির ১৭ রমজান তারিখে সংঘটিত হয়। এটি মুসলিমদের প্রথম বড় যুদ্ধ, যেখানে মুসলিমরা কাফিরদের বিরুদ্ধে বিজয়ী হয়। তবে এই যুদ্ধের পেছনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণ ছিল, যা মুসলমানদের এই সংঘর্ষে অংশগ্রহণের পথে পরিচালিত করেছিল। নীচে বদর যুদ্ধের কারণ গুলো পয়েন্ট আকারে উল্লেখ করা হলো।
- মক্কার কাফিরদের অত্যাচারঃ মক্কার কাফিররা মুসলিমদের উপর অত্যাচার এবং নির্যাতন চালাত। ইসলামের প্রতি তাদের বৈরিতা ছিল স্পষ্ট, এবং মুসলমানদের সঙ্গী বা সহযোগী হতে তারা একেবারে প্রস্তুত ছিল না। এই কারণে মুসলিমরা নিরাপত্তার জন্য মদিনায় হিজরত করতে বাধ্য হয়।
- মক্কার বাণিজ্যিক শাসনের ক্ষতিঃ মদিনায় মুসলিমদের শক্তি প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর, মক্কার কাফিররা তাদের বাণিজ্যিক লাভে ক্ষতি অনুভব করতে শুরু করে। মুসলিমদের প্রতি এই ক্ষোভ এবং তাদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেয়ার ইচ্ছা বদর যুদ্ধের পেছনে অন্যতম কারণ ছিল।
- বদর কারাভোগের উদ্দেশ্যঃ মুসলিমরা মক্কার কাফিরদের বাণিজ্যিক কনভয় আটকানোর পরিকল্পনা করেছিল, যার মাধ্যমে তারা কাফিরদের অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। এটি কাফিরদের জন্য বড় ধরনের ঝুঁকি হয়ে দাঁড়ায় এবং তারা মুসলিমদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে প্রস্তুত হয়।
- ইসলামের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণঃ ইসলামের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য, মুসলিমরা এই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল। তাদের জন্য এটি একটি জীবনের বা মৃত্যুর প্রশ্ন ছিল, এবং তারা ইসলামের শর্ত অনুযায়ী যুদ্ধ করার জন্য প্রস্তুত ছিল।
- আল্লাহর নির্দেশঃ আল্লাহর পক্ষ থেকে মুসলমানদের ওপর যুদ্ধ করার নির্দেশ এসেছিল। এটি একটি ঐশী পরীক্ষাও ছিল, যা মুসলিমদের ঈমানের শক্তি এবং তাদের ত্যাগের পরিচয় দেয়। বদর যুদ্ধের পরিণতি মুসলমানদের জন্য ঐশী অনুগ্রহ এবং সাফল্য হয়ে আসে।
বদর যুদ্ধের কারণে মক্কার কাফিরদের পরাজয় এবং মুসলিমদের বিজয় ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে স্থান পায়। বদর যুদ্ধে কতজন সাহাবী শহীদ হন তা প্রশ্নে, ১৪ জন মুসলিম সাহাবী শহীদ হন। এই যুদ্ধটি ইসলামের ইতিহাসে একটি মাইলফলক হয়ে আছে, যা মুসলিমদের জন্য আজও অনুপ্রেরণা।
বদরের যুদ্ধে মুসলমানদের সেনাপতি কে ছিলেন
বদর যুদ্ধ ইসলামের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধ। এটি ২ হিজরির ১৭ রমজান তারিখে সংঘটিত হয়, এবং এই যুদ্ধে মুসলমানদের জন্য বিজয় অনেক বেশি মূল্যবান ছিল। মুসলিম বাহিনীর জন্য এটি ছিল জীবনের এবং ঈমানের একটি চরম পরীক্ষাও। এই যুদ্ধে মুসলমানদের সেনাপতি ছিলেন হজরত মুহাম্মদ (সা.)।
যুদ্ধের আগে, রাসূল (সা.) মুসলিম বাহিনীর সেনাপতি হিসেবে তাদের প্রস্তুতি নেন। তিনি নিজে যুদ্ধের কৌশল নির্ধারণ করেন এবং মুসলিম বাহিনীর সকল সদস্যকে ঐক্যবদ্ধ করে একটি শক্তিশালী বাহিনীতে পরিণত করেন। হজরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন শুধুমাত্র ধর্মীয় নেতা নয়, বরং অত্যন্ত দক্ষ একজন সামরিক নেতাও। তাঁর নেতৃত্বে মুসলিম বাহিনী সফলভাবে বদর যুদ্ধে কাফিরদের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং একটি ঐতিহাসিক বিজয় অর্জন করে।
হজরত মুহাম্মদ (সা.) তাঁর সাহাবীদের মধ্যে যুদ্ধে অংশ নেওয়ার জন্য উত্সাহ প্রদান করেন, এবং যুদ্ধের কৌশল প্রণয়ন করে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেন। তার নেতৃত্বে, মুসলিম বাহিনী কাফিরদের সংখ্যা কম হওয়া সত্ত্বেও সফলভাবে যুদ্ধে বিজয়ী হয়। এ যুদ্ধের বিজয় ইসলামের ইতিহাসে একটি মাইলফলক হয়ে ওঠে এবং ইসলামের সাফল্যকে বিশ্বে প্রতিষ্ঠিত করে।
বদর যুদ্ধের গুরুত্ব শুধু সামরিক নয়, এটি ইসলামের শক্তি ও ঈমানের জয় হিসেবে চিহ্নিত। মুসলিমদের জন্য এটি এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত ছিল, যেখানে বদর যুদ্ধ কত হিজরীতে সংঘটিত হয় এবং বদরের যুদ্ধে মুসলমানদের সেনাপতি কে ছিলেন তা ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবে। মুসলমানদের ঐক্য, বিশ্বাস এবং সাহসের প্রতীক হিসেবে হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর নেতৃত্ব বদর যুদ্ধের পর পৃথিবীজুড়ে স্মরণীয় হয়ে আছে।
বদর যুদ্ধে কাফেরদের সংখ্যা কত
বদর যুদ্ধ ইসলামি ইতিহাসের প্রথম ও গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধ, যা ২য় হিজরিতে সংঘটিত হয়। এই যুদ্ধে একদিকে ছিলেন মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর নেতৃত্বে সাহাবীরা, অন্যদিকে ছিলেন মক্কার কুরাইশ কাফেররা। বদর যুদ্ধে কাফেরদের সংখ্যা কত ছিল এই প্রশ্নের উত্তর ইতিহাসে স্পষ্টভাবে পাওয়া যায়। কুরাইশদের পক্ষ থেকে যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল প্রায় ১০০০ জন সুসজ্জিত সৈন্য। এদের মধ্যে প্রায় ৭০০ জন উটচালক এবং ৩০০ জন ঘোড়সওয়ার ছিল। তারা ছিল ভারী অস্ত্র-সজ্জিত, যুদ্ধকৌশলে দক্ষ এবং সংখ্যার দিক থেকে মুসলিম বাহিনীর চেয়ে বহু গুণে শক্তিশালী।
অন্যদিকে, মুসলিম বাহিনী ছিল মাত্র ৩১৩ জন সাহাবী নিয়ে গঠিত, যাদের মধ্যে যুদ্ধের জন্য পর্যাপ্ত অস্ত্র কিংবা যানবাহনের অভাব ছিল। তবুও তাঁদের ছিল ঈমান, আল্লাহর ওপর অটল আস্থা, এবং নবীজির নির্দেশে জীবন উৎসর্গের মানসিকতা। এই অসম লড়াইয়ে মুসলিমরা বিজয়ী হলেও, তাদেরকেও চরম ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। বদর যুদ্ধে কতজন সাহাবী শহীদ হন এই প্রশ্নের উত্তরে জানা যায়, মোট ১৪ জন সাহাবী শহীদ হন। তাদের মধ্যে ৬ জন মুহাজির এবং ৮ জন আনসার ছিলেন।
এই যুদ্ধ ছিল সত্য ও মিথ্যার মধ্যে প্রথম বড় সংঘর্ষ, যেখানে সাহস, ত্যাগ আর ঈমানের জোরে মুসলিম বাহিনী বিজয় ছিনিয়ে নেয়। কাফের বাহিনীর বিশাল সংখ্যাবল ও শক্তিশালী অস্ত্রের মুখেও সাহাবীরা যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন, তা আজও মুসলমানদের জন্য অনুপ্রেরণা। বদর যুদ্ধের এই প্রেক্ষাপটে মুসলিম উম্মাহ বুঝে নেয়, সংখ্যায় নয় আল্লাহর সাহায্য আর সত্য পথে থাকার দৃঢ়তা দিয়েই প্রকৃত বিজয় সম্ভব।
বদরের যুদ্ধ কোথায় সংঘটিত হয়
ইসলামের ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য ও গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হলো বদরের যুদ্ধ। এই যুদ্ধটি সংঘটিত হয় হিজরি দ্বিতীয় বর্ষের ১৭ রমজান, বর্তমান সৌদি আরবের মদিনা ও মক্কার মধ্যবর্তী একটি অঞ্চলে। বদরের যুদ্ধ কোথায় সংঘটিত হয় এই প্রশ্নের উত্তরে জানা যায়, বদর নামক একটি স্থানেই এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। বদর হলো একটি ছোট জনপদ, যা মদিনা থেকে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত। এটি ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ জলাধার সমৃদ্ধ এলাকা, যা তৎকালীন সময়ে কারও জন্যও কৌশলগত দিক থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
এই স্থানটি আরব বণিকদের প্রধান বাণিজ্যপথে অবস্থিত ছিল। ফলে কুরাইশদের কাফেলা নিয়ন্ত্রণ ও অর্থনৈতিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য মুসলিমদের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যস্থল ছিল। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) মুসলিম বাহিনী নিয়ে এখানে উপস্থিত হন কুরাইশদের একটি বড় কাফেলা আটকানোর উদ্দেশ্যে। তবে কাফেলা পালিয়ে গেলে পরবর্তীতে কুরাইশরা সরাসরি যুদ্ধের জন্য এক বিশাল বাহিনী নিয়ে বদরে পৌঁছে যায়।
যুদ্ধটি ছিল সম্পূর্ণ অসম। মুসলমানদের সংখ্যা ছিল মাত্র ৩১৩ জন, বিপরীতে কুরাইশ বাহিনী ছিল প্রায় ১০০০ জনের। তারা ছিল সম্পূর্ণ অস্ত্রে সজ্জিত ও সংগঠিত। যদিও মুসলিম বাহিনী ছিল ক্ষুদ্র, কিন্তু তাদের ঈমান ও আত্মত্যাগের মানসিকতা ছিল অটুট। এই যুদ্ধে মুসলমানদের বিজয় হলেও, তাদের অনেকেই শাহাদাত বরণ করেন। বদর যুদ্ধে কতজন সাহাবী শহীদ হন এই প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে, মোট ১৪ জন সাহাবী শহীদ হন। এই শহীদদের আত্মত্যাগ ইসলামের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে আছে এবং তাদের নামগুলো আজও সম্মানের সঙ্গে উচ্চারিত হয়।
বদর যুদ্ধে প্রথম শহীদ কে
ইসলামের প্রথম ও ঐতিহাসিক যুদ্ধ বদরে মুসলমানরা অনেক সাহসিকতা ও আত্মত্যাগের পরিচয় দেন। এই যুদ্ধে যারা প্রাণ উৎসর্গ করেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন মাহজা ইবনে সালেহ (রহ.)। বদর যুদ্ধে প্রথম শহীদ কে এই প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে মাহজা ইবনে সালেহ। তিনি ছিলেন হজরত উমর (রাঃ)-এর মুক্তিকৃত দাস এবং ইসলাম গ্রহণের পর থেকে সাহসিকতা ও আনুগত্যের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেন। যুদ্ধ শুরুর আগেই কুরাইশ বাহিনীর এক হঠাৎ আক্রমণে তিনি শহীদ হন।
তাঁর শাহাদাত ছিল মুসলিম বাহিনীর মনোবল আরও দৃঢ় করার প্রেরণা, কারণ তাঁর আত্মত্যাগ প্রমাণ করেছিল যে, মুসলমানরা জীবন দিতেও প্রস্তুত। মাহজা ইবনে সালেহ ছিলেন পরিশ্রুত হৃদয়ের অধিকারী একজন সাহাবী। যুদ্ধের ময়দানে তাঁর দৃঢ়তা, আল্লাহর ওপর ভরসা এবং সত্যের প্রতি অবিচল নিষ্ঠা তাঁকে একজন প্রথম শ্রেণির মুজাহিদে রূপান্তর করেছিল। বদরের প্রাক্কালে এমন আত্মত্যাগ মুসলমানদের হৃদয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেয়, যা শেষ পর্যন্ত বিজয়ের রূপ নেয়।
বদর যুদ্ধে কতজন সাহাবী শহীদ হন এই প্রশ্নের উত্তর ইতিহাসে সংরক্ষিত আছে। এই যুদ্ধে মোট ১৪ জন সাহাবী শহীদ হন, যাঁদের মধ্যে মাহজা ইবনে সালেহ (রহ.) ছিলেন সর্বপ্রথম। শহীদ সাহাবীদের আত্মত্যাগের কারণে ইসলাম একটি দৃঢ় ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত হয়। তাঁদের সাহস, ঈমান এবং ত্যাগের ইতিহাস আজও প্রতিটি মুসলমানের হৃদয়ে গভীর শ্রদ্ধায় গাঁথা। মাহজা ইবনে সালেহ-এর শাহাদাত এই বার্তাই দেয় সত্যের পথে চলতে জীবন দেওয়াও গর্বের বিষয়।
বদর যুদ্ধে শহীদ সাহাবীদের নাম
বদর যুদ্ধ ইসলামের ইতিহাসে প্রথম ও অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধ, যা সংঘটিত হয় ২য় হিজরির ১৭ রমজান। এই যুদ্ধে সাহাবীরা অসামান্য সাহস ও ত্যাগের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। বদর যুদ্ধ কত হিজরীতে সংঘটিত হয় এবং বদর যুদ্ধে শহীদ সাহাবীদের নাম এই দুটি প্রশ্ন ইসলামের গৌরবময় অধ্যায়ের সাথে গভীরভাবে জড়িত। এই যুদ্ধে শহীদ হওয়া সাহাবীদের নাম নিচে পরিপাটি করে পয়েন্ট আকারে তুলে ধরা হলো।
- উমায়ের ইবনে আবি ওক্কাস (রাঃ) – সাহসী তরুণ, যিনি যুদ্ধের শুরুতেই শাহাদাত বরণ করেন।
- যুশ শিমালাইন বিন আব্দে আমর (রাঃ) – দ্বিগুণ আত্মত্যাগের প্রতীক ছিলেন এই সাহাবী।
- সাফওয়ান বিন ওয়াহব (রাঃ) – ইসলামের পতাকা রক্ষায় জীবন বিলিয়ে দেন।
- মাহজা ইবনে সালেহ (রাঃ) – বদরের প্রথম শহীদ হিসেবে ইতিহাসে অমর।
- আকীল ইবনু বুকাইর (রাঃ) – সত্যের পথে নির্ভীকভাবে যুদ্ধ করেন।
- উবাইদা ইবনুল হারিছ (রাঃ) – প্রথম মুখোমুখি দ্বন্দ্বে অংশ নিয়ে শাহাদাত বরণ করেন।
- সা‘দ ইবনে খাইছামা (রাঃ) – পরিবারকে রেখে শাহাদাতের মহান মর্যাদা লাভ করেন।
- মুবাশশির ইবনুল মুনযির (রাঃ) – যুদ্ধের ময়দানে সাহসের সাথে লড়াই করেন।
- হারেছা বিন সুরাকা (রাঃ) – স্বপ্নে জান্নাত দর্শন করা এক মহান শহীদ।
- রাফে ইবনে মুআল্লা (রাঃ) – রক্তে রাঙিয়ে দেন বদরের ভূমি।
- উমাইর ইবনুল হুমাম (রাঃ) – “জান্নাত কতই না নিকট!” বলে এগিয়ে যান শাহাদাতের পথে।
- ইয়াজীদ ইবনুল হারিছ (রাঃ) – সাহসিকতা ও ঈমানের শক্তিতে অনন্য।
- মুআওয়িয ইবনুল হারিছ (রাঃ) – সত্যের পথে ছিলেন অবিচল।
- আউফ ইবনুল হারিছ (রাঃ) – তাঁর শাহাদাত মুসলিম বাহিনীর মনোবল বাড়িয়ে তোলে।
এই মহৎ সাহাবীরা ইসলামি ইতিহাসে এক উজ্জ্বল দীপ্তি হয়ে রয়েছেন, যাঁদের রক্তে লেখা হয়েছে ইসলামের প্রথম বিজয়ের ইতিহাস।
লেখকের মন্তব্য
আশা করি আজকের পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা সকলে বদর যুদ্ধে কতজন সাহাবী শহীদ হন তার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষাপটে আপনাদের যদি কোন প্রশ্ন বা কোনো গুরুত্বপূর্ণ মতামত আমাদের জানানোর থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করুন। আমাদের আজকের পোস্টটি শেয়ার করার মাধ্যমে আপনার পরিবার এবং পরিজনের সকলকে বদর যুদ্ধ কত হিজরীতে সংঘটিত হয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যগুলো জানার সুযোগ করে দিন।
ধন্যবাদ
মাহ্ফুজ আইটি বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url