ফেসবুক রিলস কত ভিউ কত টাকা
ফেসবুক রিলস কত ভিউ কত টাকা সম্পর্কে বিস্তারিত বিষয়বস্তু নিয়েই থাকছে আমাদের আজকের মূল আলোচনা। সাথেই আপনাদের জন্য আরও থাকছে, রিল ভিডিও বানানোর নিয়ম সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য সমূহ।
বর্তমানে অনেকেই জানতে চান ফেসবুকে রিলস ভিডিও থেকে সত্যিকারের আয় করা যায় কিনা, তাই আমাদের আজকের পোস্টটি অবশ্যই সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন যেন ফেসবুক রিলস কত ভিউ কত টাকা সম্পর্কে বিশদ তথ্য পেতে পারেন।
.
ফেসবুক রিলস কত ভিউ কত টাকা
বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও কনটেন্টের চাহিদা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফেসবুক রিলস থেকেও আয় করার সুযোগ তৈরি হয়েছে। অনেকেই জানতে চান, ফেসবুক রিলস কত ভিউ কত টাকা এই প্রশ্নের উত্তর নির্ভর করে কয়েকটি বিষয়ের ওপর, যেমন: আপনার অবস্থান, আপনার রিলস কতটা ভাইরাল হয়েছে, এনগেজমেন্ট রেট, এবং আপনি ফেসবুকের “Reels Play Bonus” প্রোগ্রামের অংশ কিনা। নিচে পয়েন্ট আকারে গড়ে কত ভিউতে কত টাকা পাওয়া যেতে পারে তা দেওয়া হলোঃ
- ১,০০০ ভিউ = সাধারণভাবে $০.০৫ থেকে $০.১০ ডলার পর্যন্ত আয় হতে পারে।
- ১০,০০০ ভিউ = $০.৫০ থেকে $১.০০ ডলার পর্যন্ত আয় পাওয়া যেতে পারে।
- ১,০০,০০০ ভিউ (এক লাখ) = $৫ থেকে $১০ ডলারের মতো ইনকাম হয়।
- ৫,০০,০০০ ভিউ = আয় হতে পারে $২৫ থেকে $৫০ ডলার পর্যন্ত।
- ১০,০০,০০০ ভিউ (১০ লাখ) = $৭০ থেকে $১০০ বা তারও বেশি হতে পারে।
- ১,০০,০০,০০০ ভিউ (১ কোটি) = আয় হতে পারে $৫০০ থেকে $১,০০০ ডলার বা তারও বেশি, যদি ভিডিওর এনগেজমেন্ট ভালো থাকে।
তবে মনে রাখতে হবে, এই আয় নির্ভর করে আপনি ফেসবুকের কোন মনিটাইজেশন সিস্টেমে অংশ নিচ্ছেন তার উপর। Reels Play Bonus প্রোগ্রাম সব দেশে চালু নেই, তাই বাংলাদেশ বা ভারতীয় ক্রিয়েটরদের ক্ষেত্রে সরাসরি এই বোনাস না-ও পাওয়া যেতে পারে। তবে স্পনসরশিপ, ব্র্যান্ড কোলাব, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ইত্যাদির মাধ্যমে আরও বেশি আয় সম্ভব। তাই নিয়মিত মানসম্পন্ন রিলস তৈরি করলে আয় করার সুযোগ অনেকটাই বেড়ে যায়।
রিল ভিডিও বানানোর নিয়ম
সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের উপস্থিতি বাড়াতে এবং অডিয়েন্স তৈরি করতে এখন রিল ভিডিও একটি দারুণ মাধ্যম। অনেকেই জানেন না রিল ভিডিও বানানোর নিয়ম কীভাবে অনুসরণ করতে হয়, তাই নিচে সহজ ভাষায় গুরুত্বপূর্ণ নিয়মগুলো তুলে ধরা হলো:
কনটেন্টের আইডিয়া পরিষ্কার রাখুনঃ ভিডিও শুরু করার আগে বুঝে নিন আপনি কী মেসেজ দিতে চান। গল্প, টিপস, কমেডি বা ট্রেন্ড—যেটাই হোক, স্পষ্ট আইডিয়া থাকলে রিল ভালো হয়।
ভিডিওর দৈর্ঘ্য ১৫-৩০ সেকেন্ডের মধ্যে রাখুনঃ ছোট ও টু দ্য পয়েন্ট ভিডিও মানুষ বেশি দেখে এবং এতে ভিউ পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
উন্নত ক্যামেরা কোয়ালিটি ও আলো ব্যবহার করুনঃ ঝাপসা বা ডার্ক ভিডিও কেউ দেখতে চায় না। মোবাইলেই ভালো আলো ও পরিষ্কার ভিডিও বানানো সম্ভব।
আকর্ষণীয় ক্যাপশন ও হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করুনঃ ক্যাপশনটি ছোট হলেও বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে লেখুন এবং ট্রেন্ডিং ও রিলেভেন্ট হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করুন।
ভিডিওর শুরুতে হুক দিনঃ প্রথম ৩ সেকেন্ডে কিছু আকর্ষণীয় দিন যা দেখে মানুষ স্ক্রল না করে ভিডিওটি দেখতে আগ্রহী হবে।
মিউজিক বা ভয়েসওভার যোগ করুনঃ উপযুক্ত মিউজিক বা নিজের কণ্ঠে ভয়েসওভার ভিডিওকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে।
নিয়মিত পোস্ট করুনঃ ধারাবাহিকভাবে পোস্ট করলে অ্যালগরিদম আপনার কনটেন্টকে প্রোমোট করবে।
এই নিয়মগুলো মেনে চললে রিল ভিডিওর কোয়ালিটি যেমন ভালো হবে, তেমনি অর্গানিক ভিউ পাওয়াও সহজ হবে।
রিলস ভিডিও কি
রিলস ভিডিও হলো সংক্ষিপ্ত ও আকর্ষণীয় ভিডিও ফরম্যাট যা মূলত বিনোদন, তথ্য শেয়ার, টিউটোরিয়াল, বা যেকোনো ট্রেন্ডি বিষয় নিয়ে তৈরি করা হয়। এই ভিডিওগুলো সাধারণত ১৫ সেকেন্ড থেকে ৯০ সেকেন্ডের মধ্যে হয়ে থাকে এবং ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্মে ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়। রিলসের মাধ্যমে যেকোনো ব্যক্তি সহজেই নিজের প্রতিভা বা বার্তা অনেক মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারে।
রিলস ভিডিও তৈরির জন্য প্রয়োজন শুধু একটি স্মার্টফোন, ভালো আলো, এবং একটু ক্রিয়েটিভ চিন্তাভাবনা। আপনি চাইলে এতে টেক্সট, ইফেক্ট, মিউজিক, ট্রানজিশন বা ভয়েসওভার যোগ করতে পারেন, যা ভিডিওটিকে আরও মনোমুগ্ধকর করে তোলে। এই ভিডিওগুলোর সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো অল্প সময়ে মানুষের মনোযোগ কেড়ে নেওয়া এবং সহজে ভাইরাল হয়ে যাওয়া।
বর্তমানে অনেকেই এই রিলস ভিডিও বানিয়ে অর্থ উপার্জন করছেন। কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের সবচেয়ে বেশি আগ্রহ দেখা যাচ্ছে ফেসবুক রিলস কত ভিউ কত টাকা এবং রিলস ভিডিও কি এই দুই প্রশ্নের প্রতি। কারণ রিলস ভিডিওর মাধ্যমে আয় করা যেমন সম্ভব, তেমনি এটি এক ধরনের ডিজিটাল ব্র্যান্ড তৈরি করার মাধ্যমও। যারা নিজের পরিচিতি তৈরি করতে চান, তাদের জন্য রিলস ভিডিও একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে।
ফেসবুক রিলস ভিডিও কিভাবে আপলোড করে
বর্তমানে রিলস ভিডিও বানিয়ে জনপ্রিয়তা ও আয় দুটোই সম্ভব। কিন্তু অনেকেই জানেন না ফেসবুক রিলস ভিডিও কিভাবে আপলোড করে, ফলে ভালো কনটেন্ট বানিয়েও তারা দর্শকের কাছে পৌঁছাতে পারেন না। নিচে ধাপে ধাপে বিস্তারিতভাবে রিলস আপলোডের নিয়মটি ব্যাখ্যা করা হলোঃ
ফেসবুক অ্যাপ ওপেন করুনঃ প্রথমে আপনার স্মার্টফোনে ফেসবুক অ্যাপ চালু করুন। আপডেট ভার্সন থাকলে সুবিধা হবে, কারণ রিলস ফিচার পুরোনো ভার্সনে কাজ নাও করতে পারে।
Reels অপশনে যানঃ হোমপেজে নিচে থাকা মেনুবারে “Watch” বা “Reels” নামের একটি অপশন পাবেন। সেখানে ক্লিক করলেই বিভিন্ন রিলস ভিডিও দেখা যাবে এবং “Create Reel” বাটনও দেখা যাবে।
Create Reel এ ক্লিক করুনঃ এখন “Create” বাটনে ক্লিক করলে আপনি রেকর্ডিং ইন্টারফেসে চলে যাবেন। এখান থেকে সরাসরি ভিডিও রেকর্ড করতে পারবেন।
ভিডিও রেকর্ড বা আপলোড করুনঃ আপনি চাইলে নতুনভাবে ভিডিও তৈরি করতে পারেন, আবার গ্যালারি থেকে পূর্বে ধারণ করা কোনো ভিডিওও সিলেক্ট করে আপলোড করতে পারবেন।
ভিডিও এডিট করুনঃ এখানে আপনি ভিডিওর ওপর লেখা, স্টিকার, ফিল্টার, ট্রানজিশন, স্পিড অ্যাডজাস্টমেন্ট ও ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক যোগ করতে পারবেন। ভালো এডিটিং মানেই বেশি এনগেজমেন্ট।
আকর্ষণীয় ক্যাপশন ও হ্যাশট্যাগ যুক্ত করুনঃ ভিডিওর নিচে একটি সংক্ষিপ্ত, কনটেন্ট-রিলেটেড ক্যাপশন লিখুন। সেইসাথে জনপ্রিয় ও ট্রেন্ডিং হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করুন যেমন #funny, #travel, #lifehacks ইত্যাদি।
প্রাইভেসি সেটিংস ঠিক করুনঃ ভিডিওটি শুধু বন্ধুরা দেখবে নাকি সবাই তা নির্ধারণ করতে “Public”, “Friends”, অথবা “Only Me” অপশন থেকে আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী সিলেক্ট করুন।
শেষে Share বাটনে ক্লিক করুনঃ সবকিছু রেডি থাকলে “Share” বা “Post” বাটনে ক্লিক করলেই আপনার রিলস ভিডিও ফেসবুকে প্রকাশিত হয়ে যাবে।
বর্তমানে যারা রিলস থেকে আয় করতে চান, তারা প্রায়ই জানতে চান ফেসবুক রিলস কত ভিউ কত টাকা এবং ফেসবুক রিলস ভিডিও আপলোড করে কিভাবে। এই দুইটি বিষয় ভালোভাবে বুঝে কাজ করলে কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে শুরু করা একদমই সহজ।
ফেসবুক রিলস মনিটাইজেশন পলিসি
বর্তমানে ফেসবুক রিলস কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের আয়ের অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে। তবে রিলস থেকে অর্থ উপার্জনের আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ শর্ত ও নিয়ম মানা জরুরি, যেগুলোকে বলা হয় ফেসবুক রিলস মনিটাইজেশন পলিসি। ফেসবুক তাদের প্ল্যাটফর্মে ক্রিয়েটরদের ভিডিও থেকে ইনকাম করতে সুযোগ দিলেও, এটি সবার জন্য উন্মুক্ত নয় নির্দিষ্ট কিছু মানদণ্ড পূরণ করলেই কেবল এই সুবিধা পাওয়া যায়।
- প্রথমেই, আপনার একটি প্রকাশ্য (Public) পেজ বা প্রোফাইল থাকতে হবে, যেখানে নিয়মিত রিলস ভিডিও আপলোড করা হয়। পেজ বা প্রোফাইলের বয়স কমপক্ষে ৩০ দিন এবং নির্দিষ্ট সংখ্যক ফলোয়ার থাকতে হবে (সাধারণত ৫,০০০ বা তার বেশি)।
- রিলস ভিডিও হতে হবে অরিজিনাল কনটেন্ট, অর্থাৎ আপনি নিজে বানিয়েছেন এমন ভিডিও। কপি করা, অন্যের ভিডিও রিইউজ করা, বা কপিরাইট লঙ্ঘন করলে মনিটাইজেশন বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
- আপনার ভিডিওগুলোকে কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ডস ও কনটেন্ট মনিটাইজেশন পলিসি অনুযায়ী হতে হবে অর্থাৎ সহিংসতা, বিভ্রান্তিকর তথ্য, ঘৃণামূলক বার্তা বা আপত্তিকর কিছু থাকতে পারবে না।
- ফেসবুক বর্তমানে Reels Play Bonus, In-Stream Ads, এবং Overlay Ads এর মাধ্যমে রিলস থেকে ইনকাম করার সুযোগ দেয়। তবে এগুলোর অ্যাক্সেস নির্ভর করে আপনার দেশ, ফলোয়ার, এবং এনগেজমেন্টের উপর।
ফেসবুক রিলস কত ভিউ কত টাকা এবং রিল ভিডিও বানানোর নিয়ম এই দুইটি বিষয় একসঙ্গে বোঝা গেলে কনটেন্ট তৈরি ও আয়ের পথ অনেক সহজ হয়ে যায়। তাই নিয়মিত, আকর্ষণীয় ও মানসম্পন্ন ভিডিও তৈরি করাই সফলতার মূল চাবিকাঠি।
রিলস ভিডিও বানানোর এপস
রিলস ভিডিও বানাতে এখন আলাদা ক্যামেরা বা কম্পিউটারের দরকার হয় না। সঠিক মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে আপনি সহজেই প্রফেশনাল মানের ভিডিও তৈরি করতে পারেন। নিচে জনপ্রিয় ও কার্যকর কিছু রিলস ভিডিও বানানোর এপস সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো:
CapCut - ক্যাপকাটঃ এটি TikTok ও Reels নির্মাতাদের জন্য একটি অল-ইন-ওয়ান ভিডিও এডিটিং অ্যাপ। CapCut-এ রয়েছে অটোমেটিক ব্যাকগ্রাউন্ড রিমুভ, ট্রেন্ডি ট্রানজিশন, ফ্রি মিউজিক লাইব্রেরি, অটো-সাবটাইটেল, স্পেশাল ইফেক্টস এবং সহজ কাট-পেস্ট অপশন। এমনকি AI বেসড ফিচারও যোগ হয়েছে যা ভিডিওকে এক ধাপে উন্নত মানে নিয়ে যায়।
InShot - ইনসটঃ ইউজার-ফ্রেন্ডলি ইন্টারফেসের জন্য InShot নতুনদের জন্য একদম পারফেক্ট। এতে আপনি ভিডিও ট্রিম, স্প্লিট, স্পিড কন্ট্রোল, মিউজিক যোগ, টেক্সট ও স্টিকার অ্যাড, এবং ব্যাকগ্রাউন্ড ব্লার করার সুবিধা পাবেন। ফেসবুক রিলস ও ইনস্টাগ্রাম ভিডিওর সাইজ অনুযায়ী এক্সপোর্ট করার অপশনও রয়েছে।
KineMaster -কাইনমাষ্টারঃ এটি তুলনামূলকভাবে অ্যাডভান্সড ইউজারদের জন্য। এখানে আপনি মাল্টিপল ভিডিও লেয়ার, গ্রিন স্ক্রিন, ভয়েস চেঞ্জার, স্পেশাল এফেক্টস এবং ভিডিও ওপ্যাসিটি কন্ট্রোল করতে পারবেন। যাদের ইউটিউব বা ব্র্যান্ডিং ভিডিওর পাশাপাশি রিলসেও প্রফেশনাল লুক দরকার, তাদের জন্য আদর্শ।
VN Video Editor - ভি এন ভিডিও এডিটরঃ পুরোপুরি ফ্রি এবং অ্যাড-ফ্রি একটি শক্তিশালী অ্যাপ। এতে রয়েছে টাইমলাইন বেইসড এডিটিং, স্পিড কন্ট্রোল, কাস্টম ফিল্টার, রঙ নিয়ন্ত্রণ, ইন/আউট অ্যানিমেশন, ও সাবটাইটেল যুক্ত করার সুবিধা। ভিডিও এক্সপোর্ট করার সময় আপনি কোয়ালিটি ও ফ্রেম রেট নিজের মতো করে বেছে নিতে পারবেন।
Canva - ক্যানভাঃ Canva শুধু ছবি বা পোস্টার ডিজাইনের জন্য নয়—এখন এটি দিয়ে প্রোফেশনাল ভিডিও বানানো যায়। এতে রয়েছে রেডিমেড ভিডিও টেমপ্লেট, অ্যানিমেটেড এলিমেন্টস, টেক্সট ও গ্রাফিকস যুক্ত করার সুবিধা। রিলস বানাতে চাইলে Canva দারুণ একটি টুল, বিশেষ করে ইনফোগ্রাফিক বা ব্র্যান্ডেড কনটেন্টের জন্য।
বর্তমানে যারা রিলস বানিয়ে ইনকাম করতে আগ্রহী, তারা প্রায়ই জানতে চান ফেসবুক রিলস কত ভিউ কত টাকা পাওয়া যায় এবং কোন কোন এপস দিয়ে রিলস ভিডিও বানানো যায়। আপনি উপরের অ্যাপগুলো ব্যবহার করে সহজেই ট্রেন্ডি, আকর্ষণীয় ও মনোমুগ্ধকর রিলস বানাতে পারবেন যা আপনার ভিউ এবং আয় দুটোই বাড়িয়ে দিতে পারে।
ফেসবুকে রিলস ভিডিও ছাড়ার নিয়ম
ফেসবুকে রিলস ভিডিও পোস্ট করার সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম মেনে চললে আপনার কনটেন্ট অল্প সময়েই হাজার হাজার মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারে। নিচে ফেসবুকে রিলস ভিডিও ছাড়ার নিয়ম ধাপে ধাপে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হলোঃ
- ফেসবুক অ্যাপ ব্যবহার করুনঃ অনেক সময় পুরনো ভার্সনে রিলসের কিছু ফিচার কাজ করে না বা সঠিকভাবে ভিডিও আপলোড হয় না। তাই প্লে-স্টোর বা অ্যাপ স্টোর থেকে ফেসবুক অ্যাপটি সবসময় আপডেটেড রাখুন।
- “Reels” সেকশন থেকে “Create Reel” বাটনে ক্লিক করুনঃ ফেসবুক অ্যাপ চালু করে হোম স্ক্রিন বা Watch ট্যাবে গিয়ে “Reels” অংশে ঢুকে পড়ুন। সেখানে “Create” বা “+” আইকনে ক্লিক করলেই ভিডিও তৈরি বা আপলোডের অপশন পাবেন।
- ভিডিও রেকর্ড করুন অথবা গ্যালারি থেকে সিলেক্ট করুনঃ আপনি চাইলে রিয়েল-টাইমে ভিডিও রেকর্ড করতে পারেন কিংবা আগেই তৈরি করা ভিডিও মোবাইল গ্যালারি থেকে নির্বাচন করতে পারেন।
- ভিডিওতে মিউজিক, টেক্সট, ইফেক্ট ও স্টিকার ব্যবহার করুনঃ ফেসবুক রিলসের মধ্যে বিল্ট-ইন এডিটিং টুল ব্যবহার করে ভিডিওতে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক, ক্যাপশন, ট্রেন্ডি ইফেক্টস, ও স্টিকার যোগ করুন। এতে ভিডিও আরও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে।
- ভিডিও রেজোলিউশন ও রেশিও ঠিক রাখুনঃ রিলস ভিডিওর আদর্শ রেজোলিউশন হলো 1080x1920 পিক্সেল এবং রেশিও 9:16। এতে পুরো স্ক্রিন জুড়ে ভিডিও চলে এবং ভিউয়ারদের দৃষ্টি ধরে রাখতে সাহায্য করে।
- ভিডিওর প্রথম ৩ সেকেন্ডে আকর্ষণীয় হুক রাখুনঃ দর্শক প্রথম ২–৩ সেকেন্ডের মধ্যেই সিদ্ধান্ত নেয় তারা ভিডিওটি দেখবে কি না। তাই শুরুতেই এমন কিছু দেখান বা বলুন যা দর্শকের কৌতূহল জাগায়।
- সাবটাইটেল যুক্ত করুনঃ অনেকে মোবাইল সাইলেন্ট করে ভিডিও দেখে। তাই ভিডিওর কথাবার্তা বা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সাবটাইটেল আকারে দেখালে ম্যাসেজ পরিষ্কার হয় এবং এনগেজমেন্ট বাড়ে।
- লোকেশন ট্যাগ ব্যবহার করুনঃ রিলস পোস্ট করার সময় আপনার অবস্থান যুক্ত করলে নির্দিষ্ট এলাকার দর্শকদের কাছে ভিডিওটি বেশি দেখা যেতে পারে, ফলে লোকাল ভিউ বাড়ে।
- প্রাসঙ্গিক ও ট্রেন্ডিং হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করুনঃ ক্যাপশনের শেষে এমন হ্যাশট্যাগ (#) ব্যবহার করুন যা আপনার ভিডিওর বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। যেমনঃ #funny, #travel, #lifeTips ইত্যাদি।
- আকর্ষণীয় থাম্বনেইল বা কাভার ফটো নির্বাচন করুনঃ কাস্টম থাম্বনেইল ব্যবহার করলে ভিডিওর উপর ক্লিক করার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। আপনি চাইলে ভিডিওর মধ্য থেকেই ভালো একটি দৃশ্য থাম্বনেইল হিসেবে বেছে নিতে পারেন।
- প্রাইভেসি সেটিংস ঠিক করুনঃ আপনি চাইলে ভিডিওটি Public, Friends, বা Only Me হিসেবে প্রকাশ করতে পারেন। বেশি রিচ পেতে হলে “Public” সিলেক্ট করা ভালো।
- সবকিছু ঠিক থাকলে “Share” বাটনে ক্লিক করুনঃ এডিটিং, ক্যাপশন, হ্যাশট্যাগ, প্রাইভেসি সবকিছু রেডি হলে “Share” বাটনে চাপ দিন। আপনার ভিডিও এখন ফেসবুকে লাইভ।
ফেসবুকে কত মিনিটের ভিডিও আপলোড করা যায়
বর্তমানে ফেসবুক প্ল্যাটফর্মে ভিডিও কনটেন্ট শেয়ার করা একটি শক্তিশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। কিন্তু অনেকেই জানেন না ফেসবুকে কত মিনিটের ভিডিও আপলোড করা যায়, আর সে কারণে তারা ভিডিও তৈরি করতে গিয়েই বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন। মূলত ভিডিওর ধরন ও কোথা থেকে আপলোড করছেন তার উপর নির্ভর করে এর দৈর্ঘ্য পরিবর্তিত হয়।
যদি আপনি ফেসবুক অ্যাপ বা মোবাইল থেকে রিলস ভিডিও আপলোড করতে চান, তাহলে সর্বোচ্চ ৯০ সেকেন্ড পর্যন্ত ভিডিও পোস্ট করা যাবে। তবে বিশেষ কিছু প্রোফাইল বা পেজে এই সীমা ১২০ সেকেন্ড পর্যন্তও যেতে পারে। পোস্ট হিসেবে ফেসবুকে যদি ভিডিও শেয়ার করতে চান, তবে সেখানে আপনি সর্বোচ্চ ২৪০ মিনিট (অর্থাৎ ৪ ঘণ্টা) পর্যন্ত ভিডিও আপলোড করতে পারবেন, তবে এই অপশনটি মূলত ডেস্কটপ বা পেজ ম্যানেজার টুল থেকে বেশি কার্যকর।
ফেসবুক স্টোরিতে ভিডিও আপলোড করলে সেগুলোর সময়সীমা ২০ সেকেন্ডের বেশি হয় না। কিন্তু একাধিক ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করে লম্বা স্টোরিও তৈরি করা সম্ভব। অনেকেই রিলস ভিডিও বানিয়ে ইনকাম করতে আগ্রহী। সেক্ষেত্রে তাদের অবশ্যই আগে জানতে হবে ফেসবুক রিলস কত ভিউ কত টাকা, যাতে সময়, কনটেন্ট ও স্ট্র্যাটেজি সব মিলিয়ে সঠিক পরিকল্পনা নেওয়া যায়। সবশেষে বলাই যায়, ভিডিও আপলোডের সময়সীমা বুঝে কাজ করলে কনটেন্ট আরও প্রভাব ফেলবে এবং দর্শকের সাথে জড়িত থাকাও সহজ হবে।
লেখকের মন্তব্য
আশা করি আজকের পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা সকলে ফেসবুক রিলস কত ভিউ কত টাকা তার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষাপটে আপনাদের যদি কোন প্রশ্ন বা কোনো গুরুত্বপূর্ণ মতামত আমাদের জানানোর থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করুন। আমাদের আজকের পোস্টটি শেয়ার করার মাধ্যমে আপনার পরিবার এবং পরিজনের সকলকে রিল ভিডিও বানানোর নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যগুলো জানার সুযোগ করে দিন।
ধন্যবাদ
মাহ্ফুজ আইটি বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url